(১)
মেঘেরো একটা গল্প ছিল।
সে গল্পে একটা ছোট্ট বাড়ি ছিল।
সপ্ন ছিল সেই বাড়ির অন্দরে
ছড়িয়ে দেবে অনেকটা আলো।
হোকনা ভাঙ্গা খাট, ছোট্ট টেবিল আর ওই জং ধরা আলমারি।
যত্ন করে গুছিয়ে রাখবে।
সকাল হলে ভিজে চুলে একটু সোহাগ,
দুপুরে থালায় গুছিয়ে পঞ্চব্যঞ্জন।
কাজ শেষে দুপুর গড়িয়ে যাবে,
পরন্ত রোদে তখন সে এলিয়ে দেবে চুল।
আনমনে ভাববে যত রোজকার হিসাব
সূর্য যখন অস্ত যাবে
সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালিয়ে দেবে দোরে,
অপেক্ষারত দুচোখ খনে খনে
গলির বাঁকে হারাবে আনমনে।
অবসরে ছুঁচ সুতোর লড়াই হবে,
তারপর আহার শেষে অবসন্ন দেহ
ক্লান্তিতে মিশবে শয্যা পরে ।
এমন ভাবে কাটবে দুই বেলা,
চায়ের সাথে সকাল
আর কখনো কবিতার পাতায় রাত ।
বছর ঘুরে ছোট্ট একটা পুতুল পাবে সে,
তাকে নিয়ে বুনবে আরোও কত নতুন নতুন স্বপ্ন,
নিপুণ হাতে আগলে রাখবে সপ্ন বোঝাই ঝুলি।
ভেবেছিল সে অনেক আলো ছড়িয়ে দেবে। (২)
রক্তশূন্য ক্লেশহীন চোখে
আজ আর নেই কোনো স্বপ্ন
নিরব চোখে আজ জমেছে কালো ছাই,
অঙ্গে অঙ্গে পড়েছে কালছিটে
বহুদিনের ক্লান্ত দেহে অবহেলার ছাপ,
একটা তীক্ষ্ম অবজ্ঞার হাসির রেশ
লেগে আছে শুকনো ঠোঁটের কোণে,
তা এড়িয়ে যাওয়ার সাধ্য নেই কারো।
সিলিং থেকে ঝুলছে তার দেহ,
নিস্পলক চোখে অগণিত অভিযোগ,
অচেনা হওয়া আপন জন,
পনের চাহিদা, মাঝ রাতের অত্যাচার,
ঋণগ্রস্থ বাবা,
আর ভেঙ্গে যাওয়া টুকরো টুকরো সপ্ন,
এই সবকিছুর সাক্ষী এই দেহ ।
সে চেয়েছিল গুছিয়ে একটু সংসার করতে,
চেয়েছিলো ভালোবাসতে,
আর অনেকটা আলো ছড়িয়ে দিতে। (৩)
এই বৃহৎ পৃথিবীতে, কোথাও সে পায়নি ঠাঁই।
কথা ছিলো ছড়িয়ে দেওয়ার আলো,
আজ চারিদিকে জমাট অন্ধকার।
বাতাসে যেনো ঘেন্না মিশে আছে,
জানলার তপ্ত রোদের ঝালাস,
যেনো তারই রোদের প্রতিফলন।
একবার যদি মা বলতো ,
“পুড়িয়ে ফেল পুরনো খাতা,
নতুন খাতা দেবো তোকে,
মনের মত গল্প লেখ,
নতুন করে সপ্ন দেখ,”
তাহলে হয়তো মেঘও আজ হারিয়ে যেত না,
ওই লক্ষ কোটি মেঘের মত,
মেঘের ভেলায় ভেসে,
ঘুমের দেশে।
©Rupkotha Sen
#women_harrassment
#dowry
#married_women_abuse